বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষার দাবিতে সন্তানসহ মানববন্ধনে দম্পতি

 

স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষার দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে আয়োজিত মানববন্ধনে এসে অংশ নেন জুয়েল ও তাছলিমা।  ২০১৯ সালে স্নাতকোত্তর শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু করোনার কারণে পরীক্ষা হয়নি। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর পর পাঠদান ও পরীক্ষা নেওয়া শুরু হলেও করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এখন সব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ অবস্থায় রোববার (২৩ জানুয়ারি ২০২২) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তাছলিমা আক্তার ও জুয়েল মিয়া দম্পতির বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাগলী গ্রামে। জেলা শহর থেকে ওই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। তাঁরা সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে বাংলা সাহিত্যের শিক্ষার্থী।

তাছলিমা আক্তার ও জুয়েল মিয়া জানান, তাঁরা দুজন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) শেষ করেছেন। এরপর একই কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৯ সালে তাঁদের চূড়ান্ত পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু করোনার কারণে পরীক্ষা হয়নি। মাঝখানে দুই বছর চলে গেছে, এখনো পরীক্ষার ফরম পূরণই হয়নি।

এ সময় তাঁদের এক বছর বয়সী ছেলে জুনায়েদ আল জারিফও তাঁদের সঙ্গে ছিল। ছেলেকে কোলে নিয়েই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে ছিলেন তাঁরা।  

২০২০ সালে আমাদের বিয়ে হয়। আমাদের এক বছর বয়সী এক ছেলে আছে। চাকরির বয়স তো চলে যাচ্ছে। কিন্তু পড়াশোনাই শেষ হচ্ছে না। এক বছরের কোর্স তিন বছরেও শেষ করতে পারিনি।
- তাছলিমা আক্তার

জুয়েল মিয়া বলেন, পরীক্ষা না হওয়ায় একধরনের হতাশা ভর করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তো অনেক কিছুই হচ্ছে। তাহলে পরীক্ষা নিতে সমস্যা কোথায়, বুঝতে পারছি না। ফেসবুকে মানববন্ধনের বিষয়টি জানতে পেরে ৪০ কিলোমিটার দূর থেকে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসে আমরাও যোগ দিয়েছি। আমরা পরীক্ষা দিতে চাই। সরকার যেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নানাভাবে হতাশ। অনেকের পরীক্ষার সময় দুই বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। চাকরির বয়সসীমা চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে যখন আশার সঞ্চার হয়েছিল, তখন আবার বন্ধের ঘোষণায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক সবাই উদ্বিগ্ন। 

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, অফিস–আদালত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাণিজ্য মেলা—সবই খেলা, কেবল বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

 মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী নাসিম চৌধুরী, দ্বীপাল ভট্টাচার্য, সোহানুর রহমান, শামিম আহমেদ, তোফাজ্জল হোসেন তালুকদার, সাজিদুল ইসলাম, নিঝুম তালুকদার, সুদীপ লাহেরি, শাহেদ মিয়া, আসাদ বিন শফিক, ইকবাল হোসেন, আবদুল বারী, আমিনুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম, শেখ আল সাব্বির, শাহেন শাহ প্রমুখ। 

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ