রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় কোটি কোটি টাকার তুলা চাষ

 

চারা পদ্ধতিতে চুয়াডাঙ্গায় তুলা চাষ কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তুলার সাথে কৃষকরা সাথী ফসল হিসেবে ডাল, পিঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন মৌসুমি সবজির আবাদ করছে। তুলা দীর্ঘমেয়াদি ফসল হওয়ায় একই সাথে অন্য ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে তুলা গাছ ফুল আর কাঁচাপাকা ফলে ভরে গেছে। তুলা চাষ লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় কৃষকরা আগ্রাহ দেখাচ্ছেন। কৃষকরা হাইব্রিড জাতের তুলা চাষ করায় আগের তুলনায় ফলন বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ মণ বেশি হচ্ছে। ৪ হাজার ৩৩২ হেক্টর জমি থেকে চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন তুলা ও বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।

 

উৎপাদিত তুলার বাজারমূল্য ৮৫ কোটি টাকা। দেশের বাজারে তুলার চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশে হাইব্রিড জাতের তুলা চাষ এবং চারা তৈরিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে দেশে ছড়িয়ে দিতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। এ ছাড়াও আমদানি নির্ভরতা কমাতে তুলা উন্নয়ন তাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জোনে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে তুলা। এখানকার মাটি উর্বর ও জমি অন্য এলাকার চেয়ে উঁচু বলে এ জোন তুলা চাষের জন্য উপযুক্ত ধরা হয়। বর্তমানে চারা পদ্ধতি ও উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বীজ দিয়ে তুলা চাষ করছেন কৃষকরা।

 অন্যদিকে তুলা ৬ মাসের ফসল হলেও লাভজনক ব্যবসা। বর্তমানে তুলার সাথে সাথী ফসল হিসেবে পিঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন কৃষকরা।

 তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উফশি ওপি জাত, দুটি কোম্পানির হাইব্রিড জাতের বীজ রয়েছে। এ মৌসুমে চুয়াডাঙ্গা জোনে ২৮৬টি স্থানে ৪ হাজার ৩৩২ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হচ্ছে।

দোআঁশ ও পলিযুক্ত মাটি এবং উচুঁ জমি তুলা চাষের জন্য উপযুক্ত। বিঘায় হাইব্রিড জাতের বীজ লাগে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম আর উফশি ওপি জাতের বীজ লাগে ১ কেজি।

একটি তুলা গাছে ১০০ থেকে ২০০টি করে ফল ধরে। কাঁচা অবস্থায় ফলের রঙ সবুজ দেখায়। তুলা গাছে শুধু পোকা-মাকড় দমনের জন্য কীটনাশক ব্যবহার হয়।

 তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উদ্ভাবিত ১৯টি সমভূমির তুলার জাতের মধ্যে ১৮টি উচ্চ ফলনশীল ও একটি হাইব্রিড জাতের। বিদেশ থেকে দেশের দুটি কোম্পানি হাইব্রিড জাতের বীজ আমদানি করে থাকে।

চুয়াডাঙ্গা জোনের প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা শেখ আল মামুন বলেন, এবার উন্নত জাতের তুলা বীজ ব্যবহার করেছি। চারা করে তুলার আবাদ হচ্ছে। ৮ থেকে ১০ হাজার কৃষক তুলা চাষ করছে এ জোনে। এবার বৈরি আবহাওয়া কারণে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। দেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ায় বেশি তুলা চাষ হচ্ছে। সিংহ ভাগ তুলার চাহিদা দুই জেলা থেকেই মেটে।

বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান জানান, তুলা চাষের এ জন্য এলাকা উপযোগী। তুলা ক্রেতারা প্রথম থেকেই মণপ্রতি ৩ হাজার ৪০০ টাকা দাম দিয়েছে।

ধারণা করা যাচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে তুলা উৎপাদন দ্বিগুণ হবে। বাংলাদেশ মূলত তুলার যোগানের জন্য আমদানি নির্ভর। দেশীয় তুলা চাহিদা মেটাতে পারলে আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

সম্পর্কিত শব্দসমূহঃ

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ