বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রান দিতে হলো কিশোর রাকিবকে, বিচার চায় পরিবার ও এলাকাবাসী

 
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার সোনাতলায় গত ৩রা জুন শুক্রবার ডোবা থেকে মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র রাকিব হাসান (১৪) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সীমান্তবর্তী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রামের শামসুল হকের ছেলে বগুড়ার সোনাতলা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মোঃ রাকিব হাসান। গত ৩১শে মে ২০২২ তারিখ রাতে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। অনেক খোঁজা খুঁজির পর এক পর্যায়ে ৩রা জুন ২০২২ তারিখ বেলা ১১ ঘটিকায় সোনাতলা পৌর এলাকার চমরগাছা লাহিড়ী পাড়ার এক ডোবার ভেতর কচুড়ি পানায় ঢাকা অবস্থায় অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। 
 
এ ঘটনায় সোনাতলা থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত কামাল হোসেন ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে লাশটি ও ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে নিহত রাকিবের দুই বন্ধু একই গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে দিপু মিয়া (১৩) ও সোনাতলা গড় চৈতন্যপুর এলাকার মৃত আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে মাসুম মিয়া (১৩) কে আটক করে। 
 
তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ গ্রেপ্তার করে প্রকৃত খুনি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হিয়াতপুর গ্রামের মোঃ চুন্নু মিয়ার ছেলে আহসান হাবীব সজীব (২০)কে। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির প্রেক্ষিতে পিবিআই পুলিশ সুপার আকরাম হোসেনের প্রেস ব্রিফিংয়ে জানা যায়, সজীব নিহত রাকিবকে জানায়, এক মেয়েকে টাকার বিনিময় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সোনাতলার চরমগাছা লাহড়িপাড়া এলাকায় পতিত জমিতে নেওয়া হবে। পরবর্তীতে কথা মোতাবেক ৩১শে মে রাত ৮ টার দিকে সজীব ও গ্রেপ্তারকৃত মাসুম কিশোর রাকিবকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে পৌছে গ্রেপ্তারকৃত সজীব ও নিহত রাকিবের মধ্যে কে আগে ঘনিষ্ঠ হবে এই নিয়ে দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে সজীব রাকিবের মাথায় কয়েকবার আঘাত করে। আঘাতের পরে রাকিব মাটিতে লুটিয়ে পড়লে, গলা চিপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে সহযোগী মাসুম এর সহযোগিতায় সজীব রাকিবের মৃতদেহ লাহিড়ীপাড়া ডোবার ভিতর ফেলে দিয়ে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে দেয়। কিন্তু নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিবরণী অস্পষ্ট, এলাকাবাসী ও তার পরিবারের কাছে। 
 
মৃত রাকিবের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীর কাছে জানা যায়, পূর্বশত্রুতার জের ধরেই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। জানা যায়, বিগত কয়েক বৎসর আগে আহসান হাবীব সজীব, রাকিবদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে জোরে বক্স বাজায়ে গান বাজনা করে। এক পর্যায়ে নিহত রাকিবের পরিবার সজীবকে আস্তে গান বাজানোর কথা বললে, সজীব ক্ষিপ্ত হয়ে আরো জোরে বাজায়। পরবর্তীতে সারারাত গান বাজার পর ফজরের নামাজের পর রাকিবের বাবা আস্তে গানবাজাতে বলায় সজিব তার উপর ক্ষিপ্ত হওয়ায় মৃত রাকিবের বাবা একটা চড় মারে। এছাড়াও জানা যায় নিহত রাকিবের সাথে সজীবের ফ্রি ফায়ার গেম খেলা নিয়েও একটা দ্বন্দ্ব সংঘটিত হয়েছিল। ঘটনার সু্ত্রে আরো জানা যায় সজিব বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবনের সাথে জড়িত যা জেনে ফেলে ছিলো মৃত কিশোর রাকিব। যার কারনে অবশেষে প্রান দিতে হলো তাকে।
 
এলাকাবাসী ও রাকিবের পরিবারের ধারণা উক্ত ঘটনার জের ধরেই সজীব রাকিবের হত্যা সংঘটিত করেছে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে রাকিবকে। 
 
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মোঃ বেল্লাল হোসেন সোনাতলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত রাকিবের পরিবারের দাবি উক্ত হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তি দেয়া হোক। যেন এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে অপরাধীরা আর কোন মায়ের কোল খালি না করে। এলাকাবাসীরা ও চান অপরাধীর শাস্তি হোক। 

সম্পর্কিত শব্দসমূহঃ

মন্তব্য করুনঃ

মন্তব্য সমূহ (কোন মন্তব্য পাওয়া যায় নি।)

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ